আর জি কর ধর্ষন কাণ্ডে গ্রেপ্তার, কলকাতা পুলিশেরই সিভিক ভলেন্টিয়ার : নৃশংস অপরাধের রহস্য উন্মোচন

RG kar Doctor Murder Case arrested Civic Volentere Sanjoy roy

কলকাতা: আর জি করের মহিলা চিকিৎসক ধর্ষন ও খুনের অভিযোগে স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম, কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে ১৪দিনের পুলিশ হেফাজত

আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে নতুন মোড়। গ্রেপ্তার হওয়া সঞ্জয় রায়, যিনি কলকাতা পুলিশের অধীনে সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে কাজ করতেন, তাকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য প্রমাণের ভিত্তিতে সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সঞ্জয় রায়ের হাসপাতালের ভেতরে অবাধ যাতায়াত ছিল। যদিও তিনি হাসপাতালের কর্মী নন, কিন্তু একাধিক সময়ে রোগীদের ভর্তি করাতে এবং অন্যান্য কাজে তিনি হাসপাতালে প্রবেশ করতেন। এ নিয়ে স্থানীয় কর্মীদের মধ্যেও নানা অভিযোগ শোনা যাচ্ছিল।

ঘটনার দিন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রাত ২.৩০ থেকে ৩.০০ টার মধ্যে সঞ্জয় রায়কে দোতলা ও তিনতলার করিডরে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। এরপর থেকেই সন্দেহ বাড়তে থাকে এবং পুলিশ তার বয়ান থেকে অসঙ্গতি খুঁজে পায়। যদিও সঞ্জয় প্রথমে দাবি করেন, তিনি রোগীদের অবস্থা দেখতে গিয়েছিলেন, কিন্তু রোগীদের সাথে কথোপকথন থেকে জানা যায়, তিনি শেষ তিন দিন তাদের সাথে কোনো যোগাযোগ রাখেননি।

এদিন, পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজে সঞ্জয়ের গলায় একটি ব্লুটুথ হেডফোন দেখতে পায়। তবে হাসপাতাল থেকে বেরোনোর সময় সেই হেডফোন তার সাথে ছিল না। তদন্তের সময়, সেমিনার রুমে পাওয়া একটি ছেঁড়া ব্লুটুথ হেডফোনের অংশ সঞ্জয়ের ফোনের সাথে কানেক্ট হয়ে যায়, যা তাকে গ্রেপ্তার করার পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে কাজ করে।

ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনায় সঞ্জয়ের সাথে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে। তাই পুলিশ তদন্ত জারি রেখেছে এবং আরও ধারা যুক্ত করার পরিকল্পনা করছে। ইতিমধ্যে, আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকরা এবং নার্সরা কর্মবিরতি ঘোষণা করেছেন এবং তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার দাবি তুলেছেন।

এই ঘটনার জেরে চিকিৎসক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পাওয়া তথ্যগুলি আরও ভয়ঙ্কর এবং হৃদয়বিদারক। তরুণী চিকিৎসকের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন, শ্বাসরোধের প্রমাণ এবং যৌন নির্যাতনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগতভাবে এই ঘটনার তদন্তের তদারকি করছেন এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও, কলকাতা পুলিশ বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছে, যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ব্রেকথ্রু পেয়েছে।

mamata banarjee on rgkar murder care

এই ঘটনায় চিকিৎসক সমাজ ও হাসপাতালের কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ এবং আতঙ্ক বেড়ে গেছে। হাসপাতালের ভেতরের অপরাধ এবং সুরক্ষার অভাব নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। এটা স্পষ্ট, এই ঘটনাটি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি গুরুতর ব্যর্থতার উদাহরণ, যা অবিলম্বে সংশোধনের প্রয়োজন।

One thought on “আর জি কর ধর্ষন কাণ্ডে গ্রেপ্তার, কলকাতা পুলিশেরই সিভিক ভলেন্টিয়ার : নৃশংস অপরাধের রহস্য উন্মোচন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *